নিজস্ব প্রতিবেদক –
সামান্য একজন ব্যাংকার হয়ে নামে বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার এন্ড কমার্স (এসবিএসি) ব্যাংক লিমিটেডের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ব্যাংটির কর্পোরট শাখার প্রধান সৈয়দ মো: মহরম হোসেন।
অভিযোগ আছে ব্যাংটির এই পদ পাবার ক্ষেত্রেও ভিবিন্নভাবে প্রভাব খাটিয়েছেন এই ব্যাংকার। এর আগে তিনি দায়ীত্ব পালন করেছেন এনআরবি কমার্সিয়াল ব্যাংকের শাখা ব্যাবস্থাপক হিসেবে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি নিজ জেলা লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য কাজি শহিদ ইসলাম পাপুলের নাম ভাঙিয়েও বিভিন্ন জায়গায় প্রভাব বিস্তার করে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় দুটি বিলাশবহুল ফ্ল্যাটের মালিক হয়েছেন। এছাড়াও রাজধানীর আশে পাশে বেশ কিছু জমি ক্রয় করেছেন গত কয়েক বছরে। লক্ষ্মীপুরেও গড়েছেন নামে বেনামে সম্পদের পাহাড়।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কিছু অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যেমে বিভিন্ন জায়গায় বেআইনী প্রভাব বিস্তারের।
জানা যায়, কোন ব্যাংকারের বিরুদ্ধে দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ আসলে তা নিষ্পত্তি করার দায়ীত্ব নিয়ে লাখ লাখ টাকা নেন এই ব্যাংকার।
অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে নিজের স্ত্রী ফারহানা পারভীনকেও একটি ব্যাংকের গুরুতপূর্ণ পদে বসিয়েছেন এই সৈয়দ মহরম।
সেগুনবাগিচায় যে ভবনে তিনি থাকেন সেখানকার ডেভলপার ও ফ্লাট মালিক সমিতির উপর প্রভাব খাটোনোর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে
জানা যায়, চাকরি ছেড়ে আসার পর এনআরবিসি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করিয়েছে দুদকের মাধ্যমে।
এছাড়াও লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য মোহাম্মদ কাজী শহিদ ইসলাম ওরফে পাপুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে রেকর্ড ৫৮৮টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পাওয়া গেছে। এসব হিসাবে ৬১৬ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে, যার প্রায় ৬০০ কোটি টাকাই লেনদেন হয়েছে ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল—এই চার বছরে। পাপুল ও তাঁর স্ত্রী সেলিনা ইসলামের হিসাবে লেনদেন হয়েছে প্রায় ৩০০ কোটি টাকার। তবে এককভাবে সর্বোচ্চ ১৮৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে পাপুলের শ্যালিকা জেসমিন প্রধানের হিসাবে।
এনআরবিসি ব্যাংক হাতিপুল ব্রাঞ্চে এই একাউন্টগুলো খোলা হয়, ঐ সময়ে ব্যাংক ম্যানেজার ছিলো এই সৈয়দ মহররম হোসেন হিরন।
এই অবৈধ ব্যাংক একাউন্টগুলোর বিপরীতে এম পি পাপুল থেকে অন্তত ২০কোটি টাকা হাতিয়ে নেন সৈয়দ মহররম হোসেন হিরন।
একই নামে কোনো দিন শতাধিক, কোনো দিন অর্ধশতাধিক, কোনো দিন ৪০টি, কোনো দিন ২০টি বা এর কমবেশি এফডিআর অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। অল্প দিনের ব্যবধানে এসব এফডিআর খোলা হয়। আবার অনেক এফডিআর ১০ লাখ টাকার নিচে খোলা হয়েছে, যাতে অর্থের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন তোলা
না হয়। ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই এটা সম্ভব নয়, বলছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্র জানায়, সাধারণত ব্যাংকারদের সম্পদের তদন্ত করে না দুদক। কারণ কোন লোন জালিয়াতি বা মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনা ঘটলে সেগুলো নিয়ে কাজ করে দুদক। কিন্তু সৈয়দ মহরমের প্রভাবে এনআরবিসি ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত করেছে দুদক। যার মূল উদ্দেশ্য ছিলো ওই কর্মকর্তাদের হয়রানি করা।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ মহরমের মোবাইল ফোনে বার বার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
অপরদিকে দুদকে প্রভাব খাটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে, দুদকের পরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, দুদক কারো প্রভাবে কোন তদন্ত করে না। আর নিরপরাধ কারো বিরুদ্ধে তদন্ত হলে তদন্ত শেষে তিনি খালাস পাবেন।
সূত্র: দৈনিক আমাদের কন্ঠ